অর্থ ও বাণিজ্য

এপ্রিলের ২৯ দিনেই এলো ২৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স

চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ২৯ দিনেই দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার (২.৬১ বিলিয়ন ডলার)। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। শুধু ২৯ এপ্রিল একদিনেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১০৪ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্স প্রবাহে এই গতি দেশের অর্থনীতির জন্য বড় স্বস্তির বার্তা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই ২০২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল ২০২৫) প্রথম ১০ মাসে মোট ২৪ হাজার ৩৯২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮ হাজার ৯৮২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ।

ঈদুল ফিতরের পরও প্রবাসী আয়ের গতি অব্যাহত রয়েছে। মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা এক মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। চলতি অর্থবছরের প্রতিটি মাসেই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে, যা অভিবাসী শ্রমিকদের অর্থনীতিতে অব্যাহত আস্থারই প্রমাণ।

বছরের শুরু থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে এ ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জানুয়ারিতে এসেছে ২.১৯ বিলিয়ন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বরে ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার। এর আগের মাসগুলোতেও রেমিট্যান্সের প্রবাহ ছিল দৃঢ়—অক্টোবরে ২.৩৯ ও নভেম্বরে ২.২০ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি ‘বিপিএম-৬’ অনুসারে রিজার্ভ এখন ২২ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার। আর নিট রিজার্ভ বা প্রকৃত ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ১৬ বিলিয়নের কাছাকাছি, যা দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় নির্বাহ সম্ভব।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, অর্থপাচার হ্রাস, প্রবাসী আয়ে ধারাবাহিকতা ও রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি মিলিয়ে রিজার্ভের চিত্র উন্নত হচ্ছে। পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার দীর্ঘদিন ১২২ টাকায় স্থিতিশীল থাকাও অনুকূল প্রভাব ফেলেছে।

২০২২ সালের আগস্টে দেশের রিজার্ভের সর্বোচ্চ অবস্থান ছিল ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ডলার বিক্রির কারণে তা ২০২৪ সালের মাঝামাঝিতে নেমে আসে ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়নে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি বন্ধ করে বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ শুরু করে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে রিজার্ভে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রবাসী আয়ে এই প্রবৃদ্ধি ও রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের ধারা অব্যাহত থাকলে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং বৈদেশিক ঋণ নির্ভরতা কমবে।



Source

Related Articles

Back to top button